দেশে এমন ট্যুর অপারেটরের সংখ্যা এখন ৫২০। ট্যুর অপারেটর ব্যবসা দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অথচ তিন দশকে আগে, অর্থাৎ ১৯৯০ সালের আগে সারা দেশে মাত্র ৬টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ছিল। গত ১০ বছরে ৩৩৮টি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠান অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) করোনার আগে ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট ও ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টদের নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে। সম্প্রতি সমীক্ষাটি প্রকাশ করেছে। সেখানে ভ্রমণপিপাসুদের সেবা দিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের অবদান রাখছে, সেই চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএস বলছে, ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রতিবছর গড়ে ২২০ কোটি টাকা যোগ করছে। জিডিপিতে তাদের অবদান ক্রমে বাড়ছে।
ভ্রমণ ও ট্যুর অপারেটরদের সেবা প্রসঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে ফেরদৌস ইফতেখার প্রথম আলোকে জানান, করোনার আগে গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি সস্ত্রীক তিন রাত, চার দিনের প্যাকেজে থাইল্যান্ড বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ জন্য জনপ্রতি খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকার মতো। যাত্রার নির্ধারিত দিনে তিনি ঢাকার বিমানবন্দর পর্যন্ত নিজ দায়িত্বে গিয়েছেন। বাকি সব দায়দায়িত্ব পালন করেছে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বেশ আনন্দে থাইল্যান্ড ঘুরে এসেছেন তাঁরা। ফেরদৌস ইফতেখার আরও বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সস্ত্রীক থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম। তাই হোটেল খোঁজা, যাতায়াত, খাওয়াদাওয়ার ঝক্কি–ঝামেলা এড়াতে ট্যুর অপারেটরের সহায়তা নিয়েছি।’
ইদানীং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিভিন্ন ধরনের ভ্রমণ প্যাকেজের বাহারি বিজ্ঞাপন দেয় ট্যুর অপারেটররা। হাওরে ঘোরাঘুরি, ঢাকার কাছে মৈনটঘাটে মিনি কক্সবাজারের ছোঁয়া কিংবা কোনো রিসোর্টে দিনব্যাপী আনন্দ-ফুর্তিতে কাটানো—এসব বাহারি ভ্রমণের হাতছানি দেয় ওই সব প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক বিজ্ঞাপন।
ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ছে। ৫২০টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১১টিই একক ব্যক্তিমালিকানাধীন। বিবিএস বলছে, এসব প্রতিষ্ঠানে ট্যুর ব্যবস্থাপক, হিসাবরক্ষক, গাইডসহ সব মিলিয়ে ২ হাজার ৬৪৩ জন কাজ করেন। তাঁদের মাসিক বেতন গড়ে ১৪ হাজার ৫০৫ টাকা। বেতন–ভাতা বাবদ এক বছরে ট্যুর অপারেটরদের খরচ ৪৫ কোটি টাকা।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভ্রমণে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাঁরা এখন দেশ-বিদেশে নিয়মিত ভ্রমণ করেন। তাই ট্যুর অপারেটরদের ব্যবসাও বাড়ছে। তবে করোনার কারণে ব্যবসায় মন্দা চলছে। বাংলাদেশের পর্যটনের সম্ভাবনা নিয়ে টোয়াব সভাপতি বলেন, কক্সবাজার ও সিলেটে শত শত কোটি টাকা খরচ করে পাঁচ তারকা হোটেল হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগও হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, দেশের পর্যটনশিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে।
টোয়াব সূত্রে জানা গেছে, দেশের যত লোক বিদেশে ঘুরতে যান, তাঁদের ৯০ শতাংশ ট্যুর অপারেটরদের প্যাকেজ নিয়ে যান। বিদেশিরা যাঁরা এ দেশে ঘুরতে আসেন, তাঁদের প্রায় শতভাগই ট্যুর অপারেটরদের সহায়তা নেন। তবে দেশের ভেতরে খুব একটা প্যাকেজ কেনেন না কেউ।
এদিকে ট্যুর অপারেটরের পাশাপাশি ট্রাভেল এজেন্ট, ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং ব্যবসার খাতগুলোও ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। জিডিপিতে এসব খাতেরও অবদান বাড়ছে। এ কারণে বিবিএস এসব খাত নিয়ে সমীক্ষা করেছে।
বিবিএসের এই সমীক্ষার প্রকল্প পরিচালক আবদুল খালেক প্রথম আলোকে বলেন, দেশের মানুষের আয় বাড়ছে। এ কারণে তাঁরা দেশ-বিদেশে ঘুরতে যান। অর্থনীতিতে ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্টদের অবদানও বাড়ছে। আগের এসব খাতের অবদান অনুমানভিত্তিক হিসাব ছিল। এখন থেকে প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।
সম্পাদক | মোঃ আক্তারুজ্জামান মনির | নির্বাহী পরিচালক | মোছাঃ উম্মে কুলছুম আক্তার | সাধারন সম্পাদক | মোঃ জহুরুল ইসলাম | প্রধান উপদেষ্ঠা | মোঃ শাফিরুল ইসলাম | মোঃ আব্দুর রহমান | হেল্পলাইন | ০৯৬৩৮৯০০৯৯৯ | ০১৭৩৫২৫০০৮২ | ০১৭১১০১০৮৯৬ | ০১৭১৯৬৬৯৩৩৬ | ই-মেইল | ichamotinews@gmail.com |
প্রিন্টিং কার্যালয় | মিতালী প্রেস ,শাপলা সুপার মার্কেট ,বগুড়া-বাংলাদেশ।