গত ইউপি নির্বাচনে পরাজয় ও জমি নিয়ে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথার সাথে তার চাচাতো ভাই সাইদুর রহমান ওরফে সায়দার মালিথার বিরোধ চলছিল।
এলাকায় প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারে এগিয়ে যাচ্ছিল সায়দার। এজন্য পথ থেকে সরিয়ে দিতে তাকে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করা হয়। পরে কিলিং মিশনে অংশ নিয়ে ৬ জন সাইদুর ওরফে সায়দার মালিথাকে হত্যা করে।’
পাবনার সদর উপজেলার হেমায়েতপুরে সায়দার মালিথা হত্যা হত্যাকান্ডের ৭২ ঘন্টার মধ্যে এই রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেইসাথে হত্যাকান্ডে জড়িত ৬ জনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বেশকিছু আলামত।
মঙ্গলবার (১৩ই সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার গাফুরিয়াবাদ গ্রামের আনোয়ার আহমেদ স্বপন (৪২), পৌর সদরের চক ছাতিয়ানি মহল্লার আশিক মালিথা (২৮), একই মহল্লার আলিফ মালিথা (২২), কাশিপুর গ্রামের রিপন খান (২৭), গোপালপুর মাটি সড়ক মহল্লার নুরুজ্জামান রাকিব (২৪), একই এলাকার ইয়াসিন আরাফাত ইস্তি (২৬)।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আকবর মুনসী বলেন, হেমায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা চেয়ারম্যান থাকাকালে তার চাচাতো ভাই সাইদুর রহমান ওরফে সায়দার মালিথাসহ তার লোকজনদের আনুমানিক ৬০/৭০ বিঘা সম্পত্তি জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছিলেন।
গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আলাউদ্দিন মালিথা হেরে গেলে উক্ত সম্পত্তি তার চাচাতো ভাই সায়দার মালিথা ও তার লোকজন নিজেদের দখলে নিয়ে চাষাবাদ করে।
উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে ছোট খাটো মারামারির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আলাউদ্দিন মালিথার ভাই সঞ্জু মালিথাকে হেমায়েতপুর মন্ডল মোড়ে সায়দার মালিথার লোকজন মারধর করে।
এতে আলাউদ্দিন মালিথা ক্ষিপ্ত হয়ে সায়দার মালিথাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক আলাউদ্দিন মালিথার বাড়ীতে এজাহারনামীয় আসামীদের সঙ্গে বৈঠক করে আলাউদ্দিন মালিথার ভাতিজা আনোয়ার আহমেদ স্বপনকে হত্যার দায়িত্ব দেয়।
তখন আনোয়ার আহমেদ স্বপন উল্লেখিত আসামীদের নিয়ে সায়দার মালিথাকে হত্যামিশনে অংশগ্রহন করে। স্বপন নিজে তার কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে সায়দার মালিথাকে গুলি করে এবং গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামীরা তাকে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল হতে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর অভিযানে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ঢাকা, কক্সবাজার, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি বিদেশী পিস্তল, তিন রাউন্ডি তালা গুলি, দুই রাউন্ড গুলির খোসা, একটি বার্মিজ টিপ চাকু, ভিকটিমের একটি মোটরসাইকেল, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃদ তিনটি মোটরসাইকেল, হত্যাকারীদের ৫টি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিমকার্ড।
পুলিশ সুপার জানান, তাদের দেয়া তথ্যে ইতিমধ্যে মুল পরিকল্পনাকারীকে সনাক্ত করা হয়েছে। তাকেও খুব শিগগির গ্রেপ্তার করা হবে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘটনায় সদর থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চুরি, মাদক সহ মোট ২৩টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের হাজির করে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।
সম্পাদক | মোঃ আক্তারুজ্জামান মনির | নির্বাহী পরিচালক | মোছাঃ উম্মে কুলছুম আক্তার | সাধারন সম্পাদক | মোঃ জহুরুল ইসলাম | প্রধান উপদেষ্ঠা | মোঃ শাফিরুল ইসলাম | মোঃ আব্দুর রহমান | হেল্পলাইন | ০৯৬৩৮৯০০৯৯৯ | ০১৭৩৫২৫০০৮২ | ০১৭১১০১০৮৯৬ | ০১৭১৯৬৬৯৩৩৬ | ই-মেইল | ichamotinews@gmail.com |
প্রিন্টিং কার্যালয় | মিতালী প্রেস ,শাপলা সুপার মার্কেট ,বগুড়া-বাংলাদেশ।