বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের ধাড়িয়া বাজার থেকে কালকী গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা দীর্ঘ দুই দশকেও পাকা হয়নি। উন্নয়ন বঞ্চিত এই সড়কটি বর্তমানে সম্পূর্ণ চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাদা ও জলাবদ্ধতায় পথচারী ও যানবাহন চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন কোমলমতি শিক্ষার্থী ও কৃষকরা।
সোমবার (২৩ জুন) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত আর কর্দমাক্ত অবস্থা যেন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে নিত্যদিনের সঙ্গী করে তুলেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটা তো দূরের কথা—মোটরসাইকেল বা রিকশা চলাও অসম্ভব হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা হৃদয় আহম্মেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবার নির্বাচন আসলেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এই রাস্তাটি পাকা করার। কিন্তু ভোট শেষ হলে সব প্রতিশ্রুতি উধাও হয়ে যায়। দুই যুগ হয়ে গেল, এখনো উন্নয়নের কোনো চিহ্ন নেই। কালকী গ্রামের নারী নেত্রী ও সাবেক মেম্বার প্রার্থী শাহেরা আক্তার বানু বলেন, “আমাদের গ্রাম বরাবরই অবহেলিত। আমি মহিলা দল করি বলে নির্বাচনে জয়ী হলেও আমাকে বাদ দেওয়া হয়। আমাদের গ্রামের কেউ যদি অসুস্থ হয়, তাকে হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে এই রাস্তায়।
এলাকার কৃষক আব্দুল গোফফার জানান, “চাষাবাদ করে ফসল ঘরে তুলতে পারলেও ঠিকমতো বাজারে নিতে পারি না। এ বছর বৃষ্টির কারণে রাস্তায় কাদা জমে যাওয়ায় ফসল ঘরেই নষ্ট হয়ে গেছে। সরকার যদি রাস্তাটিকে পাকা করত, তাহলে আমাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হতো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, “বিগত কয়েক বছর ধরেই আমরা এই রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন জানিয়ে আসছি। আশা করছি, দ্রুত কাজ শুরু হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, “ইতোমধ্যে ইউএনও মহোদয় রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। যেহেতু জুন মাস ক্লোজিং, তাই কাজ কিছুটা দেরি হচ্ছে। নতুন অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু হবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউর রহমান জানান, “আমি রাস্তাটি সম্পর্কে অবগত নই। আপনাদের কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এলাকাবাসীর একটাই দাবি, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে দ্রুত এই কাঁচা রাস্তা পাকা করা হোক, যাতে করে তারা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারেন।
Leave a Reply