1. Aktarbd2@ichamotinews.com : ichamotinews : ichamotinews
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakir hosan : zakir hosan
সুস্বাস্থ্য ও ব্যথা উপশমে কালিজিরা তেলের উপকারিতা - ইছামতী নিউজ
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
আপডেট নিউজ :
নাইক্ষ্যংছড়িতে কোটি টাকার বার্মিজ সিগারেট উদ্ধার গাবতলীর কাগইল বাজারে তিনমাথা মোড়ে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা—চলাচলে চরম ভোগান্তি, জরুরি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কাম্য ভুটানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ডাকাতির পর শ্বাসরোধে শ্বশুর ও পুত্রবধূকে হত্যা বগুড়ায় মোটরসাইকেল নিয়ে রেললাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় কলেজ ছাত্র নিহত বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন- সিমা খাতুন এনসিপি খেলার নিয়ম বদলে দিতে এসেছে, রাজনীতির নিয়ম বদলাতে হবে- নাহিদ ইসলাম বগুড়ায় বিশাল উলামা সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম খান আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের জন্য সর্বোচ্চ আসনে ছাড় দিতে প্রস্তুত জামায়াত শিবগঞ্জে আলিয়ারহাট সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য সচিবসহ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আলোর বার্তা সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে মৌসুমি ফল উৎসব

সুস্বাস্থ্য ও ব্যথা উপশমে কালিজিরা তেলের উপকারিতা

নিউজ ডেস্ক | ইছামতী নিউজ
  • Update Time : Sunday, 22 June, 2025
  • ১২০ Time View

বাংলা ঘরের চেনা উপাদান কালিজিরা শুধু রান্নার স্বাদ বাড়াতেই নয়, দীর্ঘদিন ধরেই আয়ুর্বেদ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে এর তেল। চিকিৎসাবিজ্ঞান ও নানা গবেষণায়ও প্রমাণ মিলেছে কালিজিরা তেলের গুণাগুণের। নানা রকমের অসুস্থতা ও রোগ সারাতে বিশ্বজুড়ে শতশত বছর ধরে কালোজিরার ব্যবহার হয়ে আসছে। গবেষণায়ও বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কালোজিরার কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। এটি বীজ হিসেবে যেমন উপকারী, তেমনি তেল হিসেবেও। বিশেষজ্ঞদের মতে, কালিজিরা তেলে থাকা থাইমোকুইনোন নামক উপাদানটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদান শরীরে ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। হাঁটুর আর্থ্রাইটিস, জয়েন্টের ব্যথা, পিঠের নিচের অংশে যন্ত্রণায় নিয়মিত কালিজিরা তেল মালিশ করলে উপশম মেলে।

পুষ্টিগুণের দিক থেকেও কালিজিরা তেল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এতে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, কপার, ফসফরাস ও নিয়াসিন। যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। চুল পড়া কমানো, ত্বক উজ্জ্বল রাখা ও হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও কালিজিরা তেল উপকারী। এমনকি নিয়মিত ব্যবহারে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ ও কোলেস্টেরল হ্রাসের উপকারিতাও মিলেছে কিছু গবেষণায়। স্বাস্থ্যসচেতনরা তাই প্রতিদিনের জীবনে কালিজিরা তেলের ব্যবহারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিশেষ করে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ব্যথা উপশমে এটি এখন অনেকের প্রথম পছন্দ।

শুধু তাই নয়, কালিজিরার আরো নানা স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে:

উচ্চ রক্তচাপ কমায়: চারটি গবেষণার একটি রিভিউ বলছে, কালোজিরার তেল রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।প্রাপ্তবয়স্করা অর্ধ চা-চামচ করে দিনে দু’বার কালোজিরার তেল খাওয়াতে রক্তচাপে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখেছেন। কালোজিরার তেল রক্তচাপ কমায় কেন তা সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিতভাবে জানেন না। তবে তারা ধারণা করছেন যে, এই তেলের উচ্চ থাইমোকুইনোন রক্তচাপ কমানোর নায়ক হতে পারে। অনলাইন মেডিক্যাল প্র্যাকটিস পালোমা হেলথের পুষ্টিবিদ আরিকা হোশেট বলেন, ‘থাইমোকুইনোন প্রদাহ কমাতে পারে। এটাই হয়তো রক্তচাপ ব্যবস্থাপনায় অবদান রাখে।

কোলেস্টেরল কমায়: নিউবারি স্ট্রিট নিউট্রিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পুষ্টিবিদ স্কাইলার গ্রিগস বলেন, ‘কালোজিরার তেলে প্রচুর পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা আমাদের শরীরে উপকারী কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমায়।’ একটি গবেষণায় যেসব স্থূল নারী প্রতিদিন ৩ গ্রাম করে আট থেকে ১২ সপ্তাহ কালোজিরার তেল খেয়েছেন তাদের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল (এলডিএল) সেসব নারীর তুলনায় বেশি কমেছিল যারা কালোজিরার তেল সেবন করেননি। উল্লেখ্য যে, এসময় উভয় গ্রুপই লো ক্যালরি ডায়েটের ওপর ছিলেন। অন্য একটি গবেষণায়ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন ৩ গ্রাম করে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত কালোজিরার তেল খাওয়াতে এলডিএল কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লাইসেরাইড উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছিল। উচ্চ মাত্রার এলডিএল কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লাইসেরাইড উভয়েই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে আনে: কিছু গবেষণা বলছে, কালোজিরার তেল স্থূল ব্যক্তি বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) কমাতেও সাহায্য করতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানাননি। একটি গবেষণায় স্থূল নারীদের একটা গ্রুপকে প্রতিদিন ৩ গ্রাম করে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত কালো জিরার তেল সেবন করানো হয় এবং আরেকটা গ্রুপকে প্লাসেবো (যার কোনো থেরাপিউটিক ভ্যালু নেই) দেওয়া হয়। দেখা গেছে, প্রথম গ্রুপের নারীদের উল্লেখযোগ্য হারে ওজন কমেছে। গবেষণাকালে উভয় গ্রুপই লো ক্যালরি ডায়েট গ্রহণ করেছিল। আরেকটি গবেষণায়ও ওজন কমানোতে কালোজিরা তেলের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে- গড়ে ৪.৪ পাউন্ড বা ২.১ কিলোগ্রাম ওজন কমেছে।

ব্রণ সারায়: ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে ব্রণ সারাতেও কালোজিরার তেল প্রয়োগ করতে পারেন। ব্রণের স্থানে ২০ শতাংশ কালো জিরার তেল সমৃদ্ধ ক্রিম মেখে চমকপ্রদ ফল পাওয়া গেছে। গবেষণায় একটি গ্রুপকে ২০ শতাংশ কালোজিরা তেলের লোশন ও আরেকটি গ্রুপকে ৫ শতাংশ বেনজোয়েল পারঅক্সাইড লোশন দেওয়া হয়েছে। উভয়েই ব্রণ কমাতে ও সারাতে সমান কার্যকর ছিল। উভয়ের মধ্যে কালোজিরা তেলের লোশনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (যেমন- জ্বালাপোড়া ও চুলকানি) কম ছিল।

ত্বককে আর্দ্র করে: কালোজিরার তেল মাখলে ত্বকে আর্দ্রতা আসে ও কিছু চর্মরোগ (যেমন- একজিমা) প্রশমিত হয়। তবে এই বিষয়ে গবেষণা এখনো সীমিত। একটি গবেষণায় দিনে দু’বার করে চার সপ্তাহ কালোজিরার তেল প্রয়োগে হাতের একজিমা কমে এসেছে। এটা ওভার-দ্য-কাউন্টার ইউসেরিন লোশন ও প্রেসক্রিপশন টপিক্যাল স্টেরয়েড বিটামিথাসোনের মতোই কার্যকর ছিল।

চুল গজাতে সাহায্য করে: অনেকেই জানান যে, কালোজিরার তেল ব্যবহারে চুল আরো ঘন হয়েছে ও চুল পড়া কমেছে।তবে এই দাবিকে সত্যায়নের জন্য এখনো পর্যন্ত বলিষ্ঠ গবেষণা নেই। গবেষকদের মতে, কালোজিরার তেলে বিদ্যমান প্রোটিন ও ফ্যাটি অ্যাসিড রক্ত চলাচল বাড়িয়ে চুল গজাতে বা বিকাশসাধনে উদ্দীপনা যোগায়। একটি গবেষণায় শেভ করা মাথার চার স্থানে নারকেল তেল ও কালোজিরা তেলের মিশ্রণ এবং নারকেল তেল ও অন্যান্য তেলের মিশ্রণ দেওয়া হয়েছে।দেখা গেছে, যেখানে নারকেল তেল ও কালোজিরা তেলের মিশ্রণ দেওয়া হয়েছে সেখানে চুলের ঘনত্ব অন্যান্য স্থানের তুলনায় বেশি।

শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে পারে: কিছু গবেষণা ধারণা দিচ্ছে, কালোজিরার তেল সেবন করলে অনুর্বর পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়তে পারে। একটি গবেষণায় অনুর্বর পুরুষদের একটি গ্রুপকে প্রতিদিন ২.৫ মিলি কালোজিরার তেল এবং আরেকটি গ্রুপকে প্লাসেবো দেওয়া হয়। আড়াই মাস পর দেখা গেছে, যারা কালোজিরার তেল খেয়েছেন তাদের শুক্রাণুর সংখ্যা তুলনামূলক বেড়েছে। এমনকি শুক্রাণুগুলোর গতিশীলতাও বেড়েছে।

কীভাবে কালোজিরা তেল ব্যবহার করবেন

কালোজিরার তেল ক্যাপসুল বা লিকুইড হিসেবে সেবন করতে পারেন। পুষ্টিবিদ হোশেট কোল প্রেসড ১০০ শতাংশ বিশুদ্ধ কালোজিরা তেল ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে কালোজিরা তেল ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে ডায়েটিশিয়ান বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু চিকিৎসকের মতে, দিনে ১-২ চা চামচ কালোজিরা তেল সেবন নিরাপদ। তবে পুষ্টিবিদ হোশেটের মতে, শুরুর দিকে ১/২ চা চামচ সেবন করা উচিত। এতে শরীর অ্যাডজাস্ট করতে সময় পাবে।

যারা কালোজিরার তেল ব্যবহার করবেন না

অধিকাংশ সুস্থ মানুষের জন্য কালোজিরার তেল নিরাপদ। কিন্তু কিছু লোকের ক্ষেত্রে হতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ। এই তেল কিছু ওষুধের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া করতে পারে। যেমন- বিটা ব্লকার্স। তাই ওষুধের ওপর থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিত। কিডনিতে সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন আছে। এই তেল ব্যবহারে কিডনি ফেইলিউরের মতো ঘটনা ঘটেছে। সীমিত গবেষণার কারণে কালোজিরার তেল গর্ভবতী ও স্তন্যপান করানো নারীদের জন্য সুপারিশকৃত নয়। এই তেল ব্যবহারে কিছু মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন- জ্বালাপোড়া বা চুলকানি (যখন ত্বকে ব্যবহার করা হয়), কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি, বমিভাব ও পেটফাঁপা। স্বল্পমেয়াদে (তিন থেকে চার মাস) কালোজিরা তেল ব্যবহারে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *