মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার, স্টাফ রিপোর্টারঃ গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের মুটকি বাজার কলোনিপাড়ায় আব্দুর রহমানের আলোচিত সেই গাছটি পরিদর্শনও করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের তদন্ত কমিটির চার সদস্য।
কমিটির প্রধান ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন। অন্য সদস্যদের মধ্যে আছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন।
গত ১৯ এপ্রিল দৈনিক ইছামতী নিউজে‘আমও ধরেছে লিচু গাছে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় পড়ে যায়। এরপর অন্যান্য গণমাধ্যমও এই বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে থাকে।
সে সময় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গাছটি পরিদর্শন করেন। তবে তারা কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
তুমুল আলোচনার মধ্যেই পরদিন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের এক ভাতিজা আমটি ছিঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ করেন গাছের মালিক।
তবু এই ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা থামছে না। কেউ বলছেন, এটি বানোয়াট ঘটনা, কেউ বলছেন, প্রকৃতির খেয়াল।
তদন্ত কমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক ইছামতী নিউজকে বলেন, ‘আমটি ছিঁড়ে ফেলার কারণে গবেষণা করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে ভিডিও এবং অন্যান্য নমুনা সংশ্লিষ্ট গবেষণা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট দেয়া হবে।’
গাছটি সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, সঙ্গে আগামী বছর মুকুল আসা পর্যন্ত অপেক্ষা থাকতে বলা হয়েছে।
আমটি সম্প্রতি ছিড়ে ফেলার অভিযোগ করেন গাছের মালিক
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লিচু গাছে আম ধরার বিষয়টি অবাক হওয়ার মতো। এমন কথা বললেও প্রথমে কেউ বিশ্বাস করত না। সবাই মনে করত, হয়ত তিনি লিচু গাছে কলম করে আম গাছের চারা রোপণ করেছেন। কিন্তু তা নয়। আব্দুর রহমানের কথা শুনে এলাকার কয়েকজন তার বাড়িতে গিয়ে দেখেন, সত্যিই লিচু গাছে লিচুর সঙ্গে আমও ঝুলছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখব।’
লিচু গাছটির মালিক আব্দুর রহমান জানান, কোনো পদ্ধতি নয়, স্বাভাবিকভাবেই সেখানে আম ধরেছে। গত শনিবার সকালে তার নাতি হৃদয় ইসলাম এসে তাকে জানায়, লিচু গাছে একটা আম ধরেছে।
তিনি গিয়ে গাছে লিচুর থোকার এক পাশে একটি আম দেখে অবাক হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ এটি দেখতে ভিড় করতে শুরু করেন।
গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা দৈনিক ইছামতী নিউজের সংবাদ দেখে ঢাকা থেকে ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বারের ভাতিজা আমটি দেখতে আসে। যাওয়ার পথে রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার হন।
পরে তার চাচা সিকিম মেম্বারকে বললে সিকিম মেম্বারসহ তার সঙ্গে আরও তিন জন এসে কী শুরু করছেন বলে তিরস্কার করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা লোকজন নিয়ে আমটি ছিঁড়ে চলে যায়।
ছোট বলিয়া ইউনিয়নের পাশের গ্রামের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য একরামুল বলেন, ‘আমার বাড়ি এক কিলোমিটারের মধ্যে। আমটি ছিঁড়ে ফেলার পর গুজব উঠেছে যে এটি আঠা দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে লাগানো হয়েছিল। কিন্তু আমি যতটুকু দেখেছি, এটি বাস্তব যে লিচু গাছে আম ধরেছে। মানুষের তৈরি করা জিনিস আর আল্লাহর তৈরি করা জিনিস এর মধ্যে পার্থক্য পাওয়া যায়।
Leave a Reply