1. Aktarbd2@ichamotinews.com : ichamotinews : ichamotinews
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakir hosan : zakir hosan
আম উৎপাদনে দেশসেরা বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁ!! চালান হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশে - ইছামতী নিউজ
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট নিউজ :
বগুড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম হালিতে বেড়েছে আট টাকা সদরের মথুরা পশ্চিমপাড়া আল মদিনা জমে মসজিদের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন কাজের উদ্বোধন শিল্পী সমিতির সদস্যপদ ফিরে পেলেন জায়েদ, বাদ হতে পারে নিপুণের আবার হিট অ্যালার্ট জারি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে গ্রাম পুলিশদের – গ্রাম আদালত বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত বগুড়ায় বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল বন্ধু তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে করনীয় চলতি মাসেই আরেক দফা দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প -এর আওতায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে গ্রাম পুলিশদের নিয়ে ‘গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা বিষয়ক’ দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয় পাবনা আটঘরিয়ায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ শুরু

আম উৎপাদনে দেশসেরা বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁ!! চালান হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশে

Reporter Name
  • Update Time : Sunday, 6 June, 2021
  • ৩৭৮ Time View

নওগাঁ: উত্তরের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত বরেন্দ্র অঞ্চলের সীমান্তবর্তি জেলা নওগাঁ। মূলত ধান ও চাল উৎপাদনের জন্য নওগাঁ জেলা বিখ্যাত হলেও গত কয়েক বছর যাবত সুমিষ্ট আম উৎপাদনেও দেশসেরার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এই নওগাঁ জেলা। বর্তমানে আমের দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে সুনাম কুড়িয়ে আসছে নওগাঁ। ইতিমধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করেছে নওগাঁর সুমিষ্ট আম। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা নওগাঁর সুমিষ্ট আমকে রাজশাহী কিংবা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাম ভাঙ্গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে এমনকি বিদেশেও চালান করে প্রতারনা করে আসছে।

এই জেলাতে যেসব শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে তার অধিকাংশই কৃষিভিত্তিক। কৃষিই নওগাঁর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল চাবিকাঠি। কাটারিভোগ, কালোজিরা, জিরাশাইল, মিনিকেট চালসহ উন্নত মানের চালের জন্য এই জেলা বিশেষ ভাবে পরিচিত। এ ছাড়া ধান চাষ নির্ভর এই জেলা দেশের সিংহভাগ চালের জোগান দেয়। কিন্তু অল্প দিনেই ধানের এই রাজ্যে ঘটেছে সুমিষ্ট আম চাষের বিপ্লব। গত ১০বছরে ধানের পাশাপাশি আম চাষাবাদের ফলে পাল্টে গেছে এই এলাকার চিত্র। ভারতীয় সীমান্তবর্তি পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, ধামইরহাট উপজেলাতে বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে উঠেছে শত শত বিঘা জমিতে আমের বাগান। এছাড়াও জেলা সদর, বদলগাছী, মান্দাসহ অন্যান্য উপজেলাতেও গড়ে উঠছে আমের বাগান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমের সম্ভাব্য চাষ হয়েছে ২৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। জেলায় আম্রপালি ৭৬ শতাংশ, বারি-৪ আম ৬ শতাংশ, আশ্বিনা ৭ শতাংশ, ফজলি ৩শতাংশ, ল্যাংড়া ৩ শতাংশ, ক্ষিরসাপাত ২ শতাংশ, গৌড়মতি ১ শতাংশ, কাটিমন ১ শতাংশ ও অন্যান্য জাতের ১ শতাংশ জমিতে আমের বাগান গড়ে উঠেছে।

আমচাষীদের দাবি, পূর্বে আম চাষে জেলার ভারতঘেষা সীমান্তবর্তি উপজেলা পোরশা ও সাপাহার বেশি পরিচিত ছিলো। যে দিকে দৃষ্টি যেতো শুধুই ধু ধু ফাঁকা মাঠই চোখে পড়তো। অন্যান্য আবাদের চেয়ে আম চাষ বেশি লাভজনক হওয়ার কারণে ২০০৯ সালের পর থেকে আস্তে আস্তে ধান চাষের পাশাপাশি আম বাগান গড়ে উঠতে শুরু করে। একসময় নওগাঁর এই অঞ্চলের মানুষরাও আম বলতে পার্শ্ববর্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম খুঁজতো। অথচ কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটিতে জন্ম নেওয়া আম কিনতে দেশ-বিদেশের মানুষ আসে এই এলাকায়।

সাপাহার উপজেলার প্রান্তিক আমচাষী নওশাদ আলী জানান, গত বছর দুই বছর বয়সের আম বাগান থেকে চার লাখ টাকার আম বিক্রি করেছি। এবার নতুন করে আবার ১৫বিঘা জমি লিজ নিয়ে আম বাগান তৈরি করেছি। আল্লাহর রহমতে এবার ফল ভালো ধরেছে। গত বছর এক মণ আম ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক মণ ধানের দাম ওঠে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে এক মণ আম হাজারের নিচে নেই। কমবেশি সব জায়গায় এখন আমের বাগান গড়ে উঠেছে। সারাদেশের মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এসে আমবাগান কিনে নিচ্ছেন আর ফলনও হচ্ছে ব্যাপক। গত মৌসুমে আমের মণ চার হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। তাই সবাই এখন আমের দিকেই ঝুঁকছেন। নওগাঁয় প্রায় ছোট-বড় ২৫০টি আমের আড়ৎ রয়েছে। গত বছর এই আড়তগুলোর অধীনে কাজ করছেন প্রায় ১০হাজার মৌসুমি শ্রমিক। একজন শ্রমিক প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ খান জানান, নওগাঁর অর্থনীতির চাকা বরেন্দ্র অঞ্চলের আমে ঘুরছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে প্রতিদিন শত শত ট্রাক আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গত মৌসুমে নওগাঁর আমচাষীরা প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার আম বিক্রি করেছেন। এতে চাষীদের ঘরে এসেছে স্বচ্ছলতা, তেমনি মৌসুমজুড়ে হয়েছে হাজারো মানুষের কাজের সুযোগ।

তিনি আরো বলেন, একসময় যাদের কোনো কাজ ছিল না, তারা এখন কেউ বাগান পাহারা দিচ্ছে, কেউ বাগানের পরিচর্যা করছে। আবার কেউ ভ্যান-ট্রলি চালিয়ে আম পরিবহনের কাজ করছে। কেউ আড়ৎ খুলে বসছেন, কেউ প্যাকেটিংয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। প্রতিদিন হাজার হাজার কেজি আম কুরিয়ারে করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এ ছাড়া আম বাজারজাত করতে ধানের খড়, চটের বস্তা ও ঝুড়ির কদর বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, নওগাঁ একটি খাদ্য উদ্বৃত্ত এলাকা। বর্তমানে নওগাঁয় আম চাষ হচ্ছে বেশি। বিশেষ করে বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা জমি ইজারা নিয়ে এ অঞ্চলে আমের বাগান তৈরি করছেন। এ জেলায় আম্রপলি বা বারি-৩ জাতের আমের ফলন বেশি হচ্ছে। যে হারে দিন দিন নওগাঁয় আম চাষের আবাদ বাড়ছে, উৎপাদনের ধারা বৃদ্ধি রাখলে দেশের অর্থনীতিতে আম বিশেষ অবদান রাখবে। জেলায় অন্তত ৪৬হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে জেলায় দেশের সবচেয়ে বড় আমের বাজার গড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

জেলার সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় সীমান্তবর্তি সাপাহার উপজেলায় ১লাখ ১৯ হাজার ১৬০ টন, পোরশায় ১ লাখ ১৫ হাজার ১৯৯ টন, পত্নীতলায় ১ লাখ ১১ হাজার টন। চলতি মৌসুমে ২৫০০ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও একই জমিতে ধান ও আম চাষ হচ্ছে। যার কারণে প্রতিবছরই আমের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাপাহার আম আড়ৎ মালিক সমিতির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা জানান, গত ১০বছরে সাপাহারে আম বাজার ঘিরে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আম কিনতে আসেন। তাদের পছন্দমতো আড়তে অবস্থান করে ধিরস্থিরভাবে সরাসরি কৃষকের বাগান থেকে আম কিনতে পারেন। এমন সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা বাংলাদেশে আর কোনো জেলাতে নেই। সে কারণেই আমের বৃহৎ বাজার তৈরি হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমচাষী রেদোয়ানুর রহমান মুন জানান, জেলার সাপাহার উপজেলায় আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে এখানকার চাষীরা আম চাষে এগিয়ে থাকলেও লাভের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। কারণ এখানে আমের কোনো সংরক্ষণাগার নেই। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে আম।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *