আমার উদ্যোগতা হবার গল্প, আমি আয়েশা গাজীপুরের মেয়ে। বাবা সিভিল ডিফেন্স আর মা গৃহিণী। দুই ভাই দুই বোন আমরা ।আমি পরিবারের ছোট মেয়ে। ছোট বেলা থেকেই আঁকাআঁকি ,আর রঙ তুলিতে আমার ভীষন ঝোক। আমার ইচ্ছা ছিলো চারুকলা তে পড়াশুনা করবো। কিন্তু তা আর হয় নি এর জন্য তো রঙ তুলিতে দক্ষ হলেই হয় না এর আগেও কিছু পরীক্ষা দিয়ে পাশ হতে হয়। কিন্তু পারিবারিক ভাবে সম্মতি না থাকার কারণে এসবের প্রস্তুতি নিতে নিতে ও আর বাস্তবায়িত হতে পারে নি। আমার চাকরীর প্রতি কোন ঝোক নেই। কেন জানি আমি আমার দেশের বা আশেপাশের ৯৫% মানুষের মতো নিজেকে একজন বড় মাপের চাকুরিজীবী হিসেবে ভাবতে পারি না। আমরা বন্ধুরা ও যদি কেরিয়ার নিয়ে আলোচনা করতাম তখন আমি ছিলাম আলাদা। আমার পচ্ছন্দ ছিলো ব্যবসা।
কারন ব্যবসায় আছে স্বধীনতা, আছে নিজের পরিচয়। তাই আমি সবসময় স্বপ্ন দেখতাম আমি একদিন সফল উদ্যোগতা হবো। আর আমার উদ্যোগে সম্পূর্ন আমার নিজস্বতার ছোয়া থাকবে। কিন্ত কখনো ভাবি নি নিজের এই উদ্যোগের গল্প টা এতো দ্রূত শুরু হবে। করোনাকালে ভার্সিটি অফ। কোন কাজ নেই কোন ব্যস্ততা নেই বেশ কিছু দিন ভালো লাগছিলো এরকম বিন্দাস জীবন কিন্তু ধীরে ধীরে কেমন বিষাদ হয়ে উঠলো। হঠাৎ একদিন মনে হলো আচ্ছা আমি তো একটা কাজ শুরু করতে পারি এভাবে বসে না থেকে …কিন্তু কি করা যায়? ভাবলাম কাঠের গহনা বানানো শুরু করি। এর মাধ্যমে আমার রঙ তুলির সৃষ্টি কে ছোট পরিসরে হলেও একটা জায়গা দিতে পারবো। আমার বড় বোনকে বললাম আমি এই কাজ টা করতে চাচ্ছি ও প্রথমে আমাকে সাপোর্ট করলো কিন্তু ফাইনালি যখন শুরু করবো সেও বাধা দিলো আমার কাছে মূলধন ছিলো না এক পয়সা ও কিন্তু আমি জানতাম উদ্যোগতা হতে গেলে মূলধনের প্রয়োজন পরে আগে প্রয়োজন মনোবল ও ইচ্ছা শক্তি।
কয়েকদিন ঘ্যান ঘ্যান করে আমার বড় বোন ও দাদির কাছ থেকে মোট ১৫০০ টাকা নিয়ে নিজের উদ্যোগের বাস্তব রুপ দিতে খরচ করে ফেলি। ওদের কে বলেছিলাম একদিন এই টাকা আমি ফেরত দিয়ে দিবো। ইনশাআল্লাহ দুই মাসেরো কম সময়ে আমি তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি । তাদের টাকা ফিরিয়ে দিতে পারলেও আমি সবসময় তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। …উদ্যোগতা জীবন আসলে অনেক কঠিন। এই জীবনকে অনেক সহজ মনে করতাম আমি। আসলে সহজ নয়। উদ্যোগতাদের প্রতিটা দিন চ্যলেন্জিঙ। আমি চ্যলেন্জিঙ বিষয়ে আগ্রহী তাই উপভোগ করছি বেশ কিন্তু মাঝে মাঝে হাপিয়ে উঠি সত্যি। আমার উদ্যোগতা জীবন আরো গতীশীল হয়েছে এই বাংলাদেশ ই-কমার্স ইনড্রাস্টি পরিবারে এসে।
আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি এই পরিবারে যুক্ত হতে পেরেছি। একজন উদ্যোগতার প্রয়োজনীয় গুনাবলি গুলো আমি এই পরিবার থেকেই অর্জন করতে পারছি। উদ্যোগতা জীবন টা আসলে কি রকম বা একজন উদ্যোগতা হতে হলে কি কি প্রয়োজন তা আমি এখান থেকেই শিখছি। এমন একটা প্লাটফর্ম দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই Zulkarnain Bappi কে। আমি স্বপ্ন দেখি আমাকে একদিন সবাই সফল উদ্যোগতা হিসেবে চিনবে। আমার বানানো কাঠ গহনা একটা ব্রেন্ড হবে। আমি আত্মবিশ্বাসী ইনশাআল্লাহ একদিন আমার এই স্বপ্ন পূরন হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। Ayesha’S Creation.
আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন: www.fb.me/bd.ichamotinews
Leave a Reply