আসসালামু আলাইকুম নাম সুরমা আক্তার সেতু। ধরমপুর গ্রামের পিতা মৃত.আবুল খায়ের ও মাতাঃ- মনোয়ারা বেওয়ার ছোটকন্যা সুরমা আক্তার সেতু ডাক নাম সুরমা। তিন বোনের নাম নদীর নামে নাম। তিনবোন এক ভাই।চার ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ও আদরের সুরমা।ছোট বেলায় সে বাবা কে হারায় বাবা ডাকটা কেমন তার মনেও পরে না।পরিবারের সবার বড় ভাই।বাবা মারা যাবার পর তাই ভাইকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল।তাই সে ভাই এখন বাবা আবার বড় ভাই।মা বেঁচে আছেন। একটু একটু করে বড় হতে লাগলাম আর পড়াশোনাটাও চালিয়ে যাচ্ছিলাম ভাইয়ের সহযোগিতায়।এভাবে এস এস সি ও ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হলাম সফলতার সাথে।এরপর ফ্যামেলির সদস্য বারতে থাকায় মানে ভাই তখন বিবাহিত।আমায় আর পড়ালেখা করাতে চাইলেন না বিয়ে দিবেন ভাবলেন তবে আমার অদম্য ইচ্ছা থাকার কারণে এবং আমি তখন থেকেই টুকটাক টিউশনি করাতাম আর আমি আমার খরচটা বহন করতাম।
দোটানা ভাবের জন্য অনার্সে ইংলিশে চান্স হয়েও তাড়াতাড়ি পাশ করতে পারবো ভেবে এবং ডিগ্রিতে খরচ কম তাই সেখানেই ভর্তি হলাম এভাবে পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাকোত্তর শেষ করলাম।তবে ড্রিগী প্রথম বর্ষতেই আমি বেসরকারী একটা স্কুলে ঢুকি তারপর সেখেনে একবছর চাকুরী করার পর বাদ দেই তারপর অন্যএকটা স্কুলে ঢুকি সেখানে তিনবছর চাকুরী করি।এভাবে বেশকিছু স্কুলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম।পরবর্তীতে স্কুল বাদ দিয়ে শুধু কোচিং ও টিউশনি নিয়ে ছিলাম।হঠ্যাৎ করোনার করাল গ্রাসে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলো।বাড়িতে বসে।টাকা ইনকামের নেশা আর নিজের টাকা দিয়ে চলার স্বাচ্ছন্দবোধটা যেনো নিমিষেই হারিয়ে গেলো।ভাবছিলাম কিছু একটা করতে হবে এভাবেতো আর চলছে না।তবে কিছু যে একটা করবো এ বাসনা মনে মনে আগে থেকেই ছিলো।মনে ননে শুধু জল্পনা কল্পনা করতাম আমায় একদিন সবাই চিনবে এমন কিছু একটা করবো।
তবে তখন জানতাম না কি করবো।আমার আরেকটা অভ্যাস ছিলো ছোট বেলায় যখন খবরের কাগজ পরতাম তখন বিভিন্ন সাকসেস গল্পগুলো পড়তাম আর সেগুলো কেটে রেখে দিতাম।আর যখন কোন বিষয়ে শেখার কোন সুযোগ আসতো তখন তা মিস করতাম না।তাই দর্জিবিজ্ঞানটা আয়ত্ত্ব করেছিলাম এবং সার্টিফিকেট ও অর্জন করি সেখানে আমার অবস্হান হয় তৃতীয়।করোনার করালগ্রাসে সেই শিক্ষাটায় আমার কাজে আসবে কে জানতো?কিছু করবো একটা চিন্তা করছি এমন সময় একজন পরিচিত আমার উই এর কথা জানায় এবং লিংক দেয় এবং উই সম্পর্কে বিস্তারিত বলে।তারপর উইতে যুক্ত হয়ে লাইক কমেন্ট পরে বেশ ভালোই লাগে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়তে লাগলো।তিনমাসপর আমি বেবীড্রেস নিয়ে কাজ শুরু করি আমার পেইজের নাম (রং বেরং “Kid Collection)প্রথমত আমি মাএ ৩০০০টকা দিয়ে আমার ব্যবসাটা শুরু করি তাও কিছু টাকা ছিলো আমার ও বাকী ১৫০০ টাকা ধার করেছিলাম।কেননা, মেয়েদের প্রথমে কেউই তেমন সাপোর্ট করতে চায় না।
আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না।ব্যবসা শুরুর কিছুদিন পর আবার ইনএকটিভ হয়ে যাই।ফলে তেমন কোন কিছু করতে পারিনি।তারপর আবার তিনমাস পর পুরোদমে একটিভ থাকি “উই”গ্রুপে এবং ব্যবসার ধরণটা একটু চেঞ্জ করি কেননা ততদিনে আমি মোটামুটি একটু ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি যে একটা প্রডাক্টে না হলে নতুন কিছু এড করে ক্রিয়েটিভি আনতে হবে আর এমন কিছু পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে যা আমি সহজেই সোর্স করতে পারি।তাই পরবর্তীতে আমি কাস্টমাইজড এ্যান্টিক গহনা নিয়ে কাজ শুরু করি আমার গহনার পেইজের নাম(Fine Designs)বর্তমান আমার ১০-১২ জন শ্রমিক আছে।এবার খুলে গেলো আমার ভাগ্যের চাকা।প্রায় ১৫-১৬দিনের মাথায় “উই” থেকে আমার প্রথম গহনার অর্ডার আসলো।তখন আমি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
কেননা,আগে ভাবতাম অনলাইনো সত্যিকি আমার প্রডাক্ট কেও কিনবে?আর এতো এতো লাক্ষোপতির গল্প উই তে সত্যিকি এরা লাক্ষপতি?,সত্যি বলছি এই ধারণাটা আমার হতো।কিন্তু একটা অর্ডার আমার জীবন পুরো পাল্টে দিছে। তারপর আল্লাহর রহমতে আমায় আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি একের পর এক অর্ডার পাচ্ছি।তখন দেখলাম কি গহনার পাশাপাশি আমার বেবীড্রেসটাও অর্ডার হচ্ছে।এ সবকিছু ক্রেডিট আমার নয় আমি বলবো সব ক্রেডিট “উই” এর।”উই” এর মতো একটি প্লাটফর্ম ছিলো বলেই আজ মাথাউঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছি।””উই”” হলো যাদুর কাঠি যার ছোয়াতে আজ আমিসহ লাক্ষো নারীরা হয়ে উঠেছে স্বাবলম্বী।কিছুদিন পর লাক্ষপতির খাতায় নাম লিখাবো ইনশাআল্লাহ। “উই” এর সাথে ছিলাম, আছি থাকবো ইনশাআল্লাহ। আরো একবার ধন্যবাদ উই এর জননী নাসিমা আক্তার নিশা আপুকে। আমরা নারী আমরা পারী জেগে আছি লেগে আছি।
আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন: www.fb.me/bd.ichamotinews
এই ভাবে সফলতা গুলো তৈরি হোক আপনাদের মাধ্যমে। ধন্যবাদ ইছামতী নিউজ কে।
তোমার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো আপু। এইভাবেই এগিয়ে যাও।