1. Aktarbd2@ichamotinews.com : ichamotinews : ichamotinews
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakir hosan : zakir hosan
সৈয়দপুরে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত -১৭, পাহারা দিচ্ছে এলাকাবাসী - ইছামতী নিউজ
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০১:০৪ অপরাহ্ন
আপডেট নিউজ :
শিল্পী সমিতির সদস্যপদ ফিরে পেলেন জায়েদ, বাদ হতে পারে নিপুণের আবার হিট অ্যালার্ট জারি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে গ্রাম পুলিশদের – গ্রাম আদালত বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত বগুড়ায় বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল বন্ধু তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে করনীয় চলতি মাসেই আরেক দফা দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প -এর আওতায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে গ্রাম পুলিশদের নিয়ে ‘গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা বিষয়ক’ দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয় পাবনা আটঘরিয়ায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ শুরু শাকিবকে আমি বিয়ে করবো না -মিষ্টি জান্নাত মুখস্থ শিক্ষার পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে -প্রধানমন্ত্র

সৈয়দপুরে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত -১৭, পাহারা দিচ্ছে এলাকাবাসী

Reporter Name
  • Update Time : Monday, 8 March, 2021
  • ৩৩৪ Time View

নুরুজ্জামান সরকার- জেলা প্রতিনিধি (নীলফামারী):

নীলফামারীর সৈয়দপুরে কুকুরের কামড়ে শেষ পর্যন্ত ১৭ জন গুরুত্বরভাবে জখম হয়েছেন। এর মধ্যে ৫টি শিশু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। কুকুর আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা দেয়া হয়েছে পাড়া-মহল্লা। পাগলা কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে এখন সব কুকুরকেই এলাকা ছাড়া করতে লাঠি হাতে রাস্তায় নেমেছে যুবকরা। এতে কুকুরের মধ্যেও ভীতি ছড়িয়ে পড়ায় অন্যরকম এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া সৈয়দপুরে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন না থাকায় নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে আক্রান্তদের।

এদিকে ওইদিনই দুপুর ২ টার দিকে শহরের মিস্ত্রিপাড়া মোড় সংলগ্ন এলাকায় দোকান থেকে বাসায় ফেরার পথে কালো রংয়ের একটি কুকুর হঠাৎ পায়ে কামড়ে দেয় মুন্নার স্ত্রী শাবানাকে। এসময় এলাকার আরও ৩ জনকে কামড় দেয় কুকুরটি বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পৌরসভার ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মোছাঃ রুবিনা সাকিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৭ মার্চ রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে সাহেবপাড়া এলাকার কামালের ছেলে ইসমাইল বাড়ির পাশে রাস্তায় খেলার সময় হঠাৎ করে পিছন থেকে একটি কালো রংয়ের কুকুর এসে পড়নের প্যান্টের উপর দিয়েই নিতম্বে কামড়ে ধরে। এতে তার নিতম্বের মাংস অনেকটাই কামড়ে ছিড়ে নেয় কুকুরটি। বড় ভাই ইব্রাহিম তাকে উদ্ধার করতে গেলে তার পায়েও কামড় দেয় কুকুরটি। পরে দুই ভাইয়ের আর্তচিৎকারে পাশের পাপ্পু টেইলার্সে বসা লোকজনসহ পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

আক্রান্তরা দ্রুত সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের তাৎক্ষনিক নীলফামারী জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে তারা সেখান থেকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে তা শরীরে পুশ করেন।

এসময় মিস্ত্রিপাড়ার রাজুর ছেলে হাসান (৬) কে কামড়ে গালের মাংস খসিয়ে নেয় কুকুরটি। এতে তার ৮টি সেলাই দিতে হয়েছে।

একইভাবে ওইদিন গত রাতে মিস্ত্রিপাড়া সেতু কারখানা সংলগ্ন এলাকাসহ ওয়াপদা মোড়, গোলাহাট এলাকাতেও কুকুরটির আক্রমনের শিকার হয় আরও প্রায় ১০ জন। তাদের বেশিরভাগরই মুখে বা নিতম্বে কামড়ে দিয়েছে কুকুরটি। যাদের প্রায় সকলেরই ন্যুনতম ৩ টি থেকে ৮টি পর্যন্ত সেলাই দিতে হয়েছে জখমকৃত স্থানে।

মিস্ত্রিপাড়ার শিশু হাসানের পরিবারের লোকজন জানান, নীলফামারী হাসপাতালে গেলে ভ্যাকসিন শেষ বলে তাদের রবিবার ফেরত পাঠানো হয়। বাধ্য হয়ে তারা দীর্ঘ ১০ ঘন্টা কষ্ট সহ্য করে পরের দিন সোমবার সকালে গিয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছে। এদীর্ঘ সময় হাসান চরম যন্ত্রনায় কাতরিয়েছে বিছানায় শুয়ে। এতে বাড়ির কারই ঘুম হয়নি রাতভর।

সৈয়দপুরে প্রায়ই কুকুরের কামড়ে লোকজন আক্রান্ত হলেও এখানে ভ্যাকসিন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নয়তো সরকারী হাসপাতালের বাইরে কোন ফার্মেসী থেকে অতিরিক্ত দামে ভ্যকাসিন কিনে ব্যবহার করতে হয়। দরিদ্র মানুষের পক্ষে তা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নীলফামারী দিয়ে নানা ঝক্কি ঝামেলা পোহায়ে তারপর ভ্যাকসিন নিতে হয়।

এতেও তাদের অনেকটা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়। অথচ সৈয়দপুরে ১০০ শয্যা হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যদি ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হতো তাহলে তারা সে সুবিধা ভোগ করতে পারতো। তাদের দাবি পূর্বের মতো এখনও সৈয়দপুরে অতি প্রয়োজনীয় এ ভ্যাকসিন রাখার ব্যবস্থা করা হোক।

কুকুর আতঙ্কে মিস্ত্রিপাড়ার সারফরাজ, রাজু, সাবেত, মুন্নাসহ প্রায় ১০/১৫ জন এলাকায় পাহারা দিয়েছে রাত জেগে। মূলতঃ একটি কুকুরই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারপরও সাহেবপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, গোলাহাট, ওয়াপদা এলাকায় লোকজন অন্যান্য কুকুর তাড়ানোর জন্য লাঠি হাতে রাস্তায় অবস্থান করছিল। এতে এলাকার পরিচিত কুকুরগুলোর মাঝেও ভীতির সঞ্চার হওয়ায় সারারাত প্রায় কুকুরের কোলাহলশুন্য ছিল এলাকাগুলো।

এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে কুকুরকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন দেয়ার অভিযান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সৈয়দপুরবাসী। তাদের অভিযোগ সেই অভিযানে মালিকানাধীন কুকুরগুলোকে ভ্যাকসিন দেয়া হলেও বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ বা উপজেলা প্রশাসন কোন ভ্যাকসিন না দেয়ায় এমনটা ঘটেছে। এখন কোন কুকুর ভ্যাকসিন বিহিন তা নির্ধারণ করতে না পারায় তারা সব কুকুরকেই এলাকা ছাড়া করতে বাধ্য হচেছ।

পর পর দুদিনে ১৭ জন আক্রান্ত হওয়ায় কুকুর দেখলেই মানুষের মাঝে ভয় কাজ করছে। একারণে রাস্তায় চলাচলেও দেখা দিয়েছে অন্যরকম এক ভীতি।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ওমেদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের হাসপাতালে আসামাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক দ্রুত ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

তারা সেখানে যথাযথভাবে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এবং এখন সুস্থ আছেন। সৈয়দপুরে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এবং সব সময় প্রয়োজন না হওয়ায় জেলা সিভিল সার্জনের অধীনে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলেই তা সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *