বগুড়া শহরের একটি বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০টি ঘরসহ অন্তত ১৪টি বসত-বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও আগুনে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল ভস্মীভূত হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে শহরের চেলোপাড়া রেললাইন সংলগ্ন শিমুলতলী বস্তিতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রেললাইনের পাশে ওই বস্তিতে আগুন লাগে। এতে ১৪টি পরিবারের ঘর পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের সূত্রপাতের সময় বস্তির বাসিন্দারা সবাই দৈনন্দিন কাজে বাইরে ছিলেন। খবর পেয়ে তারা ছুটে এসে শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালান। তবে আগুনের ভয়াবহতায় রক্ষা করতে পারেননি বাড়িঘর।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চেলোপাড়ার শিমুলতলী বস্তিতে ১৭০টি পরিবারের বসবাস। সবগুলো ঘর এখানে টিন দিয়ে বানানো। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সর্বস্ব হারিয়ে আহাজারি করা মানুষগুলো ছোটাছুটি করছেন। ছাইয়ের মধ্যে খুঁজছেন ঘরে থাকা মূল্যবান সম্পদ। তবে অনেকে নিজের ঘর যেন চিনতে পারছিলেন না। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে তাদের শোবার খাট, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। হাঁড়ি-পাতিলসহ রান্না করার সামগ্রী পুড়ে যাওয়ায় অনেকের ঘরে চুলা জ্বালানোর মতো অবস্থাও নেই।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বগুড়ার উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার আব্দুল জলিল বলেন, খবর পেয়ে দ্রুততম সময়ে চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ক্ষয়ক্ষতি বলতে ১৪টি পরিবারের সবগুলো ঘরই পুড়ে গেছে, টাকার অংক এখন নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।
বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলর পরিমল চন্দ্র দাস বলেন, আগুনের খবর পেয়ে এখানে এসেছিলাম। দ্রুততম সময়ে নিয়ন্ত্রণে না এলে পুরো বস্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ১৪টি পরিবারই একদম নিম্নবিত্ত ও দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ। এরইমধ্যে তাদের এক সপ্তাহের বাজার করে দিয়েছি। প্রশাসন থেকে আজই সবরকম সহযোগিতা করা হবে।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে একমাসের খাবার, নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য টিন ও কম্বল দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি পরিবারের নগদ টাকা পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। তাদের টাকার গায়ে নম্বরের অংশ যদি ঠিক থাকে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলে টাকা ফেরত পাবে। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply