চুরি ও অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে করা মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে আইনজীবীদের জিম্মায় জামিন নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লার ভার্চুয়াল আদালতে রোজিনা ইসলামের জামিন শুনানিতে তিনি একথা বলেন।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানি করে বলেন, ‘আজকে যিনি এই মামলার বাদী তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। শুধু তাই নয় তিনি এই বিল্ডিংয়ে বসেনও না। তিনি কীভাবে মামলা করলেন? তিনি মামলা করতে পারেন না। আমরা শুনেছি মামলা করার পর বাদীর টেবিল পরিবর্তন করা হয়েছে। যেহেতু আসামি রোজিনা ইসলাম একজন নারী ও অসুস্থ, তাই যেকোন বিবেচনা অথবা আমাদের (আইনজীবীদের) জিম্মায় জামিন নিতে প্রস্তুত আছি। আমরা তাকে (রোজিনা) ট্রায়ালে হাজির করব। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় জামিন দেওয়ার বিনীত অনুরোধ করছি।
এদিন প্রথমে রোজিনার পক্ষে আইনগত যুক্তি তুলে ধরে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘দণ্ডবিধি আইনের ৪৯৬ ধারা অনুযায়ী কোনো আসামির বিরুদ্ধে মামলা হলে বিচার চলাকালে বিচারক আসামিকে জামিন দিতে পারেন। এই ধারায় জামিন দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। যদি আদালত সন্তুষ্ট হন তাহলে জামিন দিতে পারেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড নামঞ্জুর করে জামিন শুনানির জন্য আজ (২০ মে) দিন ধার্য করেন।
ওইদিন শাহবাগ থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন। বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রাখা হয়।
মঙ্গলবার আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করেন।
ওইদিন বেলা ১১টার একটু পরে সিএমএম আদালতে তোলা হয়ে রোজিনাকে। এর আগে তাকে শাহবাগ থানা থেকে আদালতে নেওয়া হয়। সকাল ৮টার দিকে রোজিনা আদালতে পৌঁছান। সে সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
গত ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে ৫ ঘণ্টার বেশি তাকে আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় আনা হয়।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা একটি ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদ রোমিও ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা সচিবালয়ে গিয়ে রোজিনাকে একটি কক্ষে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসে।
Leave a Reply