1. Aktarbd2@ichamotinews.com : ichamotinews : ichamotinews
  2. zakirhosan68@gmail.com : zakir hosan : zakir hosan
এক দিনেই দাম দ্বিগুণ - ইছামতী নিউজ
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট নিউজ :
দুর্নীতির জন্য সড়কের পিচ গলছে, তাপমাত্রার জন্য নয় অশ্লীল ছবির সঙ্গে নারীদের ছবি লাগিয়ে ফেসবুকে প্রতারণা- গ্রেপ্তার ৪ বগুড়ায় প্রতিবন্ধী ধর্ষণ মামলার আসামী গ্রেফতার বগুড়া রামশহরে দোকানঘর সহ বাড়ীঘর পুড়ে ছাই বগুড়া শিবগঞ্জের মহাস্থান মাঠে রায়নগর ইউনিয়ন বিট পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত যুব মহিলা লীগ সদরের সভাপতি আরাফাত জাহান যুঁথীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে বগুড়ায় তৃষ্ণার্ত মানুষে  হাতে সরবত বগুড়ায় ৩৫ বছর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড রায়মাঝিড়া হাইস্কুল মাঠে সালাতুল ইসতেসকা নামাজ আদায় মেলায় অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনের অভিযোগে গ্রেফতার ৫ পাবনা আটঘরিয়ার একাডেমিক সুপারভাইজারের বিদায় সংবর্ধনা

এক দিনেই দাম দ্বিগুণ

Reporter Name
  • Update Time : Wednesday, 16 September, 2020
  • ৩৭২ Time View

এক দিনেই পেঁয়াজের দাম হলো দ্বিগুণ। দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। গতকাল এক লাফেই তা ১০০ টাকা। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয় গত সোমবার। মঙ্গলবারই কারসাজি করে দাম বাড়ালেন দেশের ব্যবসায়ীরা। যদিও এই পেঁয়াজ আগে থেকেই কম দামে আমদানি করা ছিল এবং দেশে পেঁয়াজ মজুদও আছে পর্যাপ্ত। এর পরও যৌক্তিক কারণ ছাড়াই কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বাড়ানো হলো। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সব সময়ই সুযোগসন্ধানী। সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তারা প্রায়ই এভাবে ভোক্তাকে জিম্মি করে অনৈতিক ব্যবসা করেন।
গতকাল রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়। ক্রস দেশি পেঁয়াজ (দেশি ও ভারতীয় মিশ্র) ৯০ টাকা কেজি। আগে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এ পণ্যের দাম একই হারে বেড়েছে। দাম বাড়ার খবরে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। ফলে একসঙ্গে অস্বাভাবিক চাহিদা তৈরি হয়। বিক্রেতারাও সেই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। প্রতি মুহূর্তে দাম বাড়াতে থাকেন তারা।
ব্যবসায়ীরা অজুহাত দেখান, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার কারণে দেশের বাজারে স্বাভাবিক সরবরাহ নেই। কিন্তু জানা গেছে, যাদের কাছে পেঁয়াজ আছে তারা আরও বেশি লাভের আশায় মজুদ করছেন। বাজারে ছাড়ছেন না। এতে অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
গত সোমবার রাতে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশের বাজারে দাম বাড়াতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। দাম বাড়ার খবরে ওই রাত থেকেই গতকাল দিনভর পেঁয়াজ কিনতে ভিড় করেন ক্রেতা। অনেকে আতঙ্কে হুমড়ি খেয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনেছেন। মিরপুরের উত্তর পীরেরবাগ বাজারে খুচরা ব্যবসায়ী শাহিন আহমেদ বলেন, দোকানে থাকা পেঁয়াজ রোববার দিবাগত রাতেই বিক্রি শেষ হয়ে যায়। আবার সকালে আনলেও তা দুপুরের আগে বিক্রি হয়ে যায়।
মিরপুর ১ নম্বর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা সফিকুর রহমান বলেন, একজন খুচরা ক্রেতা স্বাভাবিক সময়ে সর্বোচ্চ ৫ কেজি পেঁয়াজ নেন। গতকাল অনেকেই বস্তাভর্তি (৫০ কেজি)
পেঁয়াজ কিনেছেন। বাজারে পেঁয়াজের দাম যেমন দ্বিগুণ বেড়েছে, বিক্রিও তেমন বেড়েছে। এই বাজারের ক্রেতা আজগর আলী গতকাল দুপুরে ৯০ টাকা কেজিতে পাইকারি আড়ত থেকে ৭০ কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। তিনি বলেন, গত বছরের মতো একই পরিস্থিতিতে যাতে না পড়তে হয় এ জন্য বেশি কিনেছেন।
গতকাল দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের টিম এই বাজারে অভিযান চালায়। এ সময় বিক্রমপুর ভাণ্ডারে অস্বাভাবিক দামে বিক্রির প্রমাণ পান তারা। প্রতিষ্ঠানটির প্রমাণপত্রে দেখা যায়, বগুড়ার প্রতিষ্ঠান সোনালি ট্রেডার্স সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর ২৮ টাকা কেজি দরে ২ লাখ ৭৬ হাজার কেজি পেঁয়াজ আমদানি করে। তখন অভিযানকারী টিম আড়তে ৩৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রির পরামার্শ দেয়। এই দামে বিক্রি না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। আড়তদার কম দামে বিক্রির কথা স্বীকার করলেও অভিযানকারী টিম চলে যাওয়ার পরেই ওই আড়তে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয় ফের। শুধু এই বিক্রমপুর ভাণ্ডার নয়, রাজধানীর সব আড়ত ও বাজারে দামের চিত্র একই। আগে ২৮ থেকে ৩০ টাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ এখন অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর ১ ও পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের আড়তে পাইকারি প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। গত রোববার পাইকারি আড়তে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা ছিল। এ হিসাবে পাইকারিতে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। কম দামে আমদানি করা ও দেশি পেঁয়াজে কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী মো. রকিব হোসেন বলেন, আমদানিকারকরা আড়তে বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। পাবনা ও ফরিদপুরের মোকামেও এখন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে পাইকারি আড়তে কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই। বাজার দামেই বেচাকেনা করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মোমিন মণ্ডল বলেন, আমদানি সরবরাহ না বাড়লে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। দেশি পেঁয়াজ শেষ দিকে। এই পেঁয়াজ শেষ হওয়ার আগেই নতুন মৌসুমের আগ পর্যন্ত চাহিদা মেটাতে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধের কারণে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় শুধু তদারকি করে দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। ঘাটতি পেঁয়াজের আমদানি বাড়াতে এখনই সরকারকে জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান সমাকালকে বলেন, ভারত এর আগেও তিনবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে। এবারও হঠাৎ করে বন্ধ করায় আমদানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যদিও দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি বর্তমানে নেই। এর পরও অতিরিক্ত মুনাফার জন্য দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আবার এক শ্রেণির ভোক্তা অতিরিক্ত কিনছেন। এবার পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো এবং সরকারেরও গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আগাম প্রস্তুতি থাকায় দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে। টিসিবির মাধ্যমে এক লাখ টন পেঁয়াজ এলে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকবে না। তিনি আরও বলেন, ভারতের মতো বাংলাদেশে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় আলাদা মন্ত্রণালয় বা বিভাগ থাকা উচিত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখছে। এ অবস্থায় আলাদা মন্ত্রণালয় হলে সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
ঢাকার বাইরে থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা দাম বৃদ্ধির তথ্য জানান। হিলির (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জাহিদুল ইসলাম জানান, হিলিতে পেঁয়াজ কেজিতে ৪০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় পেঁয়াজ বোঝাই ৩০০ ট্রাক আটকা পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকরা। এ ছাড়া প্রায় ১৫ হাজার টন পেঁয়াজের এলসি করা আছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, ভারতে আটকাপড়া পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক আজ বুধবার দেশে আসবে। তিনি জানান, আটকে পড়া ট্রাক এবং এলসির পেঁয়াজ আনার অনুমতি পাওয়া গেছে।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এম কামরুজ্জামান জানান, ভোমরা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মাকসুদ খান তাকে জানিয়েছেন, ভারত থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ ডলারে এতদিন পেঁয়াজ এসেছে। দেশটিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানি বন্ধ করেছে। এখন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি করে খুব দ্রুত আবারও পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারে।
গাইবান্ধা প্রতিনিধি উজ্জল চক্রবর্ত্তী জানান, পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধে ভারতের ঘোষণার পর বাজারে দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি আমদানি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০ টাকা হয়েছে। গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারের আড়তদার বিদ্যুৎ কুমার সাহা জানিয়েছেন, আমদানি পেঁয়াজ ৭০ টাকা এবং দেশি ৮০ টাকা কেজি দরে তার দোকানের সব পেঁয়াজ ক্রেতারা কিনে নিয়েছেন।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি খলিলুর রহমান শেখ জানান, নেত্রকোনায় খুচরায় এক রাতে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *